কবিতা
ওমর শামস করোনাকালীন
আমার যখন জন্ম হয়েছিলো তখন ঈশ্বর অসুস্থ ছিলেন।
সে সময় শীত বসন্তে রূপান্তরিত হচ্ছিলো। কুয়াশা ছিলো, টগর, কোকিলের ডাকও ছিলো।
ফেব্রুয়ারির শীতে মার্চের শীষ ফুটছিলো আবার হাজার বছরের না ফোটা প্রাকৃতিক পশুর ডিমও ভাংছিলো, বেরোচ্ছিলো হাওয়ায়, নিঃশ্বাসে, বাদুড়ের ডানায়।
আমার যখন জন্ম হয়েছিলো ।
আমি যখন পেটে, মা আমার ঈশ্বরের কাছে গিয়েছিলেন এক নিশুতিতে। নামাজের মোনাজাতে ক্ষীণ প্রতিবাদ করেছিলেন দুর্দশার, ক্ষুধার, মারির, সাইক্লোনের, শাসনের, ত্রাসনের মানুষের অমানুষিকতার।
ফরিয়াদের ক্ষীণ হাওয়ায়, বাষ্পে, নিঃশ্বাসে ঈশ্বর করোনা আক্রান্ত হলেন, যদিও তিনি মুখ খোলেন নি।
আমার যখন জন্ম হয়েছিলো তখন ঈশ্বর অসুস্থ ছিলেন।
কামরুল হাসান শিশুদের চুমু খাওয়ার দিন
আয়রে আবার তোরা, লুতুপুতু গালে ঠোঁট, ঠোঁটে গাল আয় ফের বুকের ভেতর সেই যে চুমুর বৃষ্টি বাবা-মার, নিয়ে যারে ফের আয়রে তৃষিত ঠোঁট সেইসব নরোম মুখের দিকে গালে গাল, কপালে কপাল মুখ ভরে চুমু নিতে আয়তো আবার বড়ো হয়ে চলে গেলি কত শত দূরে ভাবতো, মা-বাবা থাকে কী করে? বলতো কত লক্ষ চুমু পেল একেকটি গাল? দুই দিয়ে গুণ করে পাবি কত লক্ষের হিসাব কপালের চুমুগুলো যোগ হবে থুতনির চুমুদের সাথে তারপরেও আছে চুমু চোখের উপর, আছে গালে ঠোঁট, ঠোঁটে গাল এন্তার এন্তার। এখন কী করে কাটে বয়সী বাপ, বয়সী মার দিন? আয়তো রঙিন সেই লুতুপুতু চুম্বনের স্মৃতি নিয়ে আয় দেখি তোরা তোদের মায়াবী মুখ দূর ও অচিন অচেনা সকল মুখের দিকে সাহসী ফেরানো। দেখি ওরা নিয়ে আসে একদল ফোলা ফোলা গাল আর লাল লাল ঠোঁটের শিশু দেখি বারবি ডলেরা নামে আর হাঁটে গুটিগুটি আয়রে নতুন শিশু ঠোঁটের নাগালে চলে আয় দাদা-দাদী, নানা-নানী মেতে ওঠে ফের চুমুর উৎসবে!
সেলিম মাহমুদ আমার আকাশ আর তার সৌর-পরিবার
গেল শীতে আমার আকাশ ছিলো ছেঁড়াখোঁড়া ; আজ এই গ্রীষ্মদিনে দিবারাত্রি আকাশটা ভুলবার মতো নয় মনোরম ! মেঘের আকাশ দেখ দেখি, সেও কতো স্নিগ্ধ একদম চোখ জুড়িয়ে যায় ! এক্রিলিক রঙে রাঙিয়ে তাকে রঙধনু রঙে টেনে নিলাম যেন শিশুর হাতে, সে খুশি হয় এমন কিছু ধরিয়ে দেয়া।
আকাশটা জনতাদলের কাছে কলকারখানার কাছে জিম্মি ছিলো মুক্তিপণ দাবী করা ছিলো তাদের নিত্যকাজ।
আমার আকাশ তার সৌর-পরিবারে আবার মিলিত হলো। আর আমার শিশুকন্যাটিও সকালে আমাকে জ্ঞান দিলো: জানো আব্বু, গ্রহ শুক্র হয় শুকতারা।
খান রুহুল রুবেল মাধুকরী
ভিক্ষাপাত্র হাতে বের হই-- অথচ, ঝুলিতে আমার ছিল বাজারের বাসনা।
যা কিছু মেলে গান, ধান-দুর্বা-খড় বাসীভাত, সাদা নুন, আশ্বিনে ঝড় কুড়িয়ে বাড়িয়ে দেখি মুঠোতে ধরে না, ছাই হয়ে ঝরে পড়ে গুঁড়ো গুঁড়ো সোনা।
ভিক্ষাপাত্র হাতে বের হই-- অথচ, ঝুলিতে আমার ছিল বাজারের বাসনা
|